Instagram Marketing
23rd November 2021 By Russel
blog

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া গুলোর মধ্যে ফেসবুক এরপর ইনস্টাগ্রাম ই সবচেয়ে জনপ্রিয়। আর মার্কেটিং ছাড়া একটি ব্যবসার গ্রোথ কল্পনাও করা যায় না। কেননা আপনার বিজনেসের লক্ষ লক্ষ কাস্টমার সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত। আর যেকোনো ব্যবসা, প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর প্রচার করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি বিসনেস (business) এর মার্কেটিং (marketing) না করেন তাহালে কখনো প্রডাক্ট এর বিষয়ে মানুষরা জানতে পারবে না।
আর যখন আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে মানুষরা জানতে পারছে না তাহালে কিভাবে সেই প্রডোক্ট বিক্রি বা জনপ্রিয় হবে। এজন্য প্রতিটা ব্যবসার মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে এমন একটি মাধ্যম বেছে নিতে হবে যেখানে বিজনেস বা প্রোডাক্ট এর উপর মানুষের রুচি থাকবে।
তাই, যেকোনো ব্যবসার জন্য আমরা সহজে গ্রাহক পেয়ে যাই Facebook, Twitter, Instagram এর মতো অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো থেকে।
বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে তার সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে ইনস্টাগ্রাম এর মতো জনপ্রিয় অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোর ব্যবহারকারীর সংখ্যা। আর এই সুযোগ গ্রহন করে আপনি ইনস্টাগ্রাম (Instagram) এর লক্ষ লক্ষ ইউজারদের কাছে সার্ভিস বা প্রোডাক্ট এর প্রচার মার্কেটিং করতে পারবেন। আর এটাই হলো মূলত ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং (Instagram marketing)।

তো চলুন আজকে বিস্তারিত এ সম্পর্কে জেনে নেই। অর্থাৎ, ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং কি? কিভাবে করবেন ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং? এবং কেন করবেন?

ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং কি?

ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সেবা সমূহকে সঠিক পদ্ধতিতে সবার কাছে পৌছানোই হল ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং।

কিভাবে ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং করবেন?

প্রথমে আপনাকে সঠিক ইনফরমেশন দিয়ে account তৈরি করতে হবে এবং তৈরি করার সময় নামটা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। এরপর আপনার প্রোফাইলে ইন্সটাগ্রাম bio সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে হবে। তারপর আপনার ইনস্টাগ্রাম এ্যাকাউন্টকে বিজনেস এ্যাকাউন্টে পরিবর্তন করতে হবে। তারজন্য আপনার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলের মধ্যে setting রয়েছে যার মধ্যে switch to professional account. আপনি এই অপশনটি দেখাবেন, তাহালে আপনার প্রোফাইল বিজনেস প্রোফাইল দেখাবে। এই অপশন করতে হলে আপনি যাবেন,
Setting <> account <> switch to professional account
ব্যস হয়ে গেলো আপনার ইনস্টাগ্রাম বিজনেস এ্যাকাউন্ট। তবে হ্যা, আপনার নাম এবং বায়োলজি সর্তকতার সাথে সঠিকভাবে পূরন করবেন। চেষ্টা করবেন ইউনিক রাখার জন্য।
কিন্ত মনে রাখবেন, এই অপশনটি ব্যবহার করার জন্য আপনার একটি Facebook business page অবশ্যই থাকতে হবে।
এর পরে আপনি নিয়মিতভাবে ফটো, ভিডিও, কন্টেন্ট পাবলিশ করবেন। এতে ধীরে ধীরে অধিক ফলোয়ার্স পেয়ে যাবেন। শেয়ার করার সময় অবশ্যই ছোট একটি স্টাটাস দিবেন। যেখানে আপনার পণ্য সম্পর্কে কিছু লিখুন। প্রতিদিন ২-৩ টা ছবি আপলোড করুন। যেকোন সময় আপলোড করবেন না।
আপনার কাস্টমাররা যেই সময়ে একটিভ থাকে তখন আপলোড করুন। এজন্য বিভিন্ন টুলস ব্যবহার করে পোস্ট গুলোকে শিডিউল করে রাখতে পারেন।

এখন আপনার গ্রাহকদের সাথে যতবেশি সম্ভব কানেক্ট হওয়ার চেস্টা করুন। এদের DM করুন। কমেন্ট এর রিপ্লাই করুন। তাদেরকে ফলো করতে হবে।
এরপর যখন আপনার পোস্ট গুলো আস্তে আস্তে সবার কাছে পৌছাবে তখন আপনার ব্যবসা সম্পর্কে, পণ্য সম্পর্কে সবাই জানতে থাকবে। এখন আপনার গ্রাহকদের সাথে যতবেশি সম্ভব কানেক্ট হওয়ার চেস্টা করুন। এদের DM করুন। কমেন্ট এর রিপ্লাই করুন। তাদেরকে ফলো করতে হবে।
এরপর যখন আপনার পোস্ট গুলো আস্তে আস্তে সবার কাছে পৌছাবে তখন আপনার ব্যবসা সম্পর্কে, পণ্য সম্পর্কে সবাই জানতে থাকবে।
লোকেশন সঠিক অবস্থান যুক্ত করুন যাতে সঠিক জায়গায় সঠিক কাস্টমার খুজে পেতে পারেন।

তাছাড়া আপনার বিজনেস এর সাথে জড়িত অন্যদের বিজনেসের প্রডাক্টের উপর নজর রাখবেন তাহালে দ্রুত বেশি পরিমানে ফলোয়ার্স পেয়ে যাবেন।

যখন আপনার ইনস্টাগ্রাম একাউন্টে প্রচুর পরিমানে ফলোয়ার্স (followers) হয়ে যাবে, তখন নিচের প্রক্রিয়া গুলো অনুসারন করে ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং করতে পারবেন।

১) Instagram Stories এর ব্যবহার

ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল এর মাধ্যমে ২৪ ঘন্টার জন্য বিভিন্ন পোষ্ট শেয়ার করতে পারবেন ফলোয়ার্সদের সাথে। Instagram stories এর পোষ্ট ২৪ ঘন্টা পরে আবার নিজে থেকে রিমুভ হয়ে যাবে। এখানে আপনার বিসনেস এর প্রডাক্টের সাথে জড়িত বিভিন্ন ধরনের আপডেট সহ photo, video গুলো শেয়ার করতে পারেন।
যার ফলে ফলোয়ার্সরা আপনার বিসনেস এর update গুলো Instagram stories এর মাধ্যমে দেখতে পারবে। মনে রখবেন Instagram stories হলো সম্পর্ন ফ্রি তবে, এটা একটি দারুন মার্কেটিং টুল।

২) IGTV ব্যবহার করুন
IGTV মানে হলো ইনস্টাগ্রাম টিভি। যার মাধ্যমে আপনি লম্বা হাই কোয়ালাটির ভিডিও পাবলিশ করতে পারবেন। এমনিতে আপনি প্রোফাইলে কিছু সেকেন্ডের ভিডিও দিতে পারবেন। তবে, আইজিটিভি এর মাধ্যমে ৬০ মিনিটের লম্বা বিসনেসের ভিডিও পাবলিশ করতে পারবেন। আপনি business এর ভিডিও তৈরি করে ফলোয়ার্সদের উদ্দেশ্যে দিতে ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং করতে পারবেন।

৩) প্রোডাক্টটের টিজার পোস্ট করুন
আপনি ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে কোনও জিনিস বিক্রি করতে চাইলে তার একটি টিজার তৈরি করে পোস্ট করুন। সেটির দাম, ফিচার, ছাড়, কাজ ইত্যাদি একাধিক তথ্য দিয়ে ছোটো ভিডিওর আকারে পোস্ট করুন। ভিডিওর শেষে ডাউনলোড অ্যাপ বা জিনিস কিনুন এরকম শব্দ ব্যবহার করে আপনার মূল ওয়েবসাইটের সঙ্গে হাইপারলিঙ্ক করে দিতে পারেন।

৪) ইনফ্লুয়েনসারদের সঙ্গে পার্টনারশিপ করুন আপনার প্রোডাক্টের টার্গেট অডিয়েন্স অনুযায়ী ইনস্টাগ্রামে ইনফ্লুয়েনসার বাছুন। মনে রাখবেন ইনফ্লুয়েনসারদের ফলোয়ার সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে এমনিতেই কোনও পোস্ট বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়। তাই ইনফ্লুয়েনসারদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ুন। তাদের সঙ্গে পার্টনারশিপ করুন ও তাদের মাধ্যমে নিজের প্রোডাক্টের ব্র্যান্ডিং করান।

৫) Hashtags (#) ব্যবহার করুন
আপনি সব সময় বিসনেস এর জড়িত প্রডাক্টের সাথে hashtags (#) গুলো ব্যবহার করবেন। # ট্যাগ এর মাধ্যমে আপনার ইনস্টাগ্রাম পোষ্ট গুলোকে categorized করতে পারবেন। এতে সহে টার্গেট ফলোয়ার্সরা categorized post গুলো সহজে পেয়ে যাবে। তাছাড়া আপনি # tags ব্যবহার করার ফলে পাবলিশ করা পোষ্ট গুলো # tags ক্যাটগরিতে পেয়ে যাবেন। এতে সহজে আপনি প্রচুর পরিমানে ভিউ (views) পেয়ে যাবেন।

৬) সঠিক সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ পোস্ট করুন
নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে দিনে একাধিক পোস্ট করবেন না। এতে ইউজাররা বিরক্ত হয়ে আনফলো করে দিতে পারে। তাই অল্প পরিমাণ ভালো পোস্ট তৈরি করে পোস্ট করুন। সিম্পলি মেসরড-এর করা সমীক্ষা অনুযায়ী সোমবার এবং বৃহস্পতিবার কোনও কিছু পোস্ট করলে তা বেশি সফল হয়। কো-শি়ডিউলের করা সমীক্ষা অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে ৯টা ও রাত ২টোর সময় করা পোস্ট বেশি সফল হয়। উল্লেখ্য, আপনি একই দিনে একাধিক পোস্ট করতে চাইলে তা কোলাজ করে বা স্লাইডের মাধ্যমে পোস্ট করতে পারেন।

৭) সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে ট্র্যাক করুন
আপনার পেজটি কীরকম কাজ করছে, কীরকম পোস্ট ইউজারদের বেশি পছন্দ হচ্ছে সেটা জানতে না পারলে আপনার অ্যাকাউন্ট কোনও দিনই উন্নতি করবে না। তাই ইউজারদের গতিবিধি সবসময় নজরে রাখুন। ইউজারদের লাইক, কমেন্ট করতে বলুন। এতে ইউজারদের পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা হবে। নিজের অ্যাকাউন্টে সবসময় অ্যাভারেজ ইউজার এনগেজমেন্ট বজায় রাখার চেষ্টা করুন। তবে আপনার ফলোয়ার সংখ্যা কম হলে তা এনগেজমেন্টের হার যেন বেশি হয়। ওয়েবসাইটের সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করুন। কতজন আপনার লিঙ্ক করা ইউআরএল-এ ক্লিক করছে সেটাও নজরে রাখুন।

যখন আপনার পোস্ট গুলো আস্তে আস্তে সবার কাছে পৌছাবে তখন আপনার ব্যবসা সম্পর্কে, পণ্য সম্পর্কে সবাই জানতে থাকবে। এভাবেই ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার পণ্যকে সবার কাছে পৌছিয়ে বিক্রি বৃদ্ধি করতে পারবেন।

ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং কেন করবেন?

বর্তমানে সোশিয়াল মিডিয়া গুলোর মধ্যে ফেসবুক এরপর ইনস্টাগ্রাম ই সবচেয়ে জনপ্রিয়। আর সোশিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং ছাড়া একটি বিজনেসের গ্রোথ কল্পনাও করা যায় না। কেননা আপনার ব্যবসায়ের লক্ষ লক্ষ কাস্টমার সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত।

এক্ষেত্রে আপনি সহজেই তাদের কাছে আপনার পণ্য সম্পর্কে জানাতে পারছেন। ফেসবুক অনেক বেশি ব্যবহারকারী থাকর জন্য সঠিক গ্রাহকদের টার্গেট করেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না। কিন্ত ইনস্টাগ্রাম এ তুলনামূলক কম ব্যবহারকারী হওয়ায় ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এজন্যই ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং বেশী ফলপ্রসূ। তো আর দেরী কেনো আপনার বিজনেসে গ্রোথ আনতে আজই শুরু করে দেন ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং।